×
অনুসন্ধানें

বিশ্বাস কোন অনুভূতি নয়

কীভাবে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হয় তা বোঝা

আমি আমার গ্লাসে বরফ-ঠান্ডা লেবুর শরবত ঢাললাম, একটি পেন্সিল সূঁচালো করলাম, আমার বাইবেলটি বের করে, আমার অ্যাসাইনমেন্ট করার জন্য প্রস্তুত হলাম। এর আগের দিন গ্রীষ্মকালের বাইবেল স্কুল প্রশিক্ষণের অধ্যাপক আমাদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে,‘‘রোমীয় পুস্তকে বিশ্বাস সম্বন্ধে যা যা লেখা রয়েছে সেগুলো নিয়ে ক্লাসের জন্য একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে নিয়ে আসবে।’’ এই অ্যাসাইনমেন্টটার কথা শুনে বেশ সহজ মনে হয়েছিল, ভেবেছিলাম যে এটা করতে তেমন সময় লাগবে না।

কিন্তু আমার জন্য একটি চমক অপেক্ষা করছিল। শীঘ্রই আমি বুঝতে পারলাম যে, রোমীয় পুস্তকে বিশ্বাস শব্দটি অনেকবার ব্যবহার করা হয়েছে আর এই অধ্যয়নটি করতে আমার যতটুকু সময় লাগবে ভেবেছিলাম তার থেকেও অনেক বেশি সময় লাগবে।

বিশ্বাসকে সংজ্ঞায়িতকরণ

রোমীয় পুস্তক পড়ার সময় আমি বিশ্বাস সম্বন্ধে যা খুঁজে পেয়েছিলাম সেটা নিয়ে আমি নিজেকে এই প্রশ্ন করছিলাম যে, আমার জীবনে সম্ভবত বিশ্বাসই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কিন্তু কীভাবে আমি একে সংজ্ঞায়িত করব? এটা আসলে কি?

তখন আমার আট বছর আগের কথা মনে পড়ল যখন আমি প্রথমবার একটি খ্রীষ্টিয়ান সংস্থা ক্যাম্পাস ক্রসেড ফর ক্রাইস্ট এ যোগদান করেছিলাম। তখন আমি বিশ্বাসে চলা সম্বন্ধে কিছুই বুঝতাম না। আমি ভাবতাম যে, আমি হয়ত বুঝতে পারার অনেকগুলো সীমা পার করে এসেছি। কিন্তু আমি বুঝতে পারলাম যে বিশ্বাস সম্পর্কে এতকিছু জানার পরও আমি এটাকে সংজ্ঞায়িত করতে পারছি না।

আমি জানতাম যে বাইবেলে বিশ্বাস সম্বন্ধে হাজারো উল্লেখ রয়েছে, যেমন ‘‘কেবল বিশ্বাসের মধ্য দিয়েই মানুষকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করা হয়।’’ এবং ‘‘জগতের উপর যা জয়লাভ করেছে তা হল আমাদের বিশ্বাস।’’ কিন্তু আমি অবাক হলাম যে আমি একটা শব্দের সহজ একটি ব্যক্তিগকৃত সংজ্ঞায় উপনীত হতে পারি নি, আমি কখনই এই বাক্যটি সম্পূর্ণ করতে পারি নি: ‘‘আমার জন্য বিশ্বাস মানে হল________________________।’’

আমি প্রার্থনা করেছি , প্রভু, তুমি কীভাবে বিশ্বাসকে সংজ্ঞায়িত করবে?

তখন আমার একটি ঘটনা মনে পড়ল যেটা যীশু একজনকে বলেছিলেন, ‘‘ ইস্রায়েলীয়দের মধ্যেও এত বড় বিশ্বাস কারও মধ্যে আমি দেখি নি।’’ এমন কি ছিল যার জন্য যীশু ‘‘এত বড় বিশ্বাস’’ এর কথা বলেছেন?

তখনই আমি লূক ৭ এর অধ্যায়ের সেই সেনাপতির ঘটনাটি বের করলাম যে স্বেচ্ছায় বিশ্বাস করেছিল যে, যীশু একজন মৃত্যুপথযাত্রী বিশ্বস্ত এবং আস্থাভাজন দাসকে সুস্থ করতে পারেন। সেই সেনাপতি যীশুকে বলল,‘‘ আপনি কেবল মুখে বলুন, তাতেই আমার দাস ভাল হয়ে যাবে।’’ তখন সেই সেনাপতি বিশ্বাস সম্বন্ধে বোঝানোর জন্য ব্যক্তিগত একটি উদাহরণ দেখিয়েছিলেন যে তাঁর কথা এবং তাঁর প্রতি বাধ্য থাকার অর্থ কী।

এই সেনাপতির কথার পরিপ্রেক্ষিতে যীশু তাঁর পেছনে অনুসরণ করা জনতার দিকে ফিরলেন এবং বললেন,‘‘ আমি আপনাদের বলছি, ইস্রায়েলীয়দের মধ্যেও এত বড় বিশ্বাস আমি কখনও দেখি নি।’’ যীশু ‘‘এত বড় বিশ্বাস’’ কথাটির মাধ্যমে সহজভাবে বুঝিয়েছেন যে, তাঁর কথায় বিশ্বাস করাটাই মূল বিষয়।

এই সংজ্ঞাটি কি শাস্ত্রের কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে? ইব্রীয় ১১ অধ্যায়কে কখনও কখনও ‘বিশ্বাসের

ঈশ্বরকে বাক্য হিসাবে গ্রহণ

অনুচ্ছেদটি বার বার পড়ার মাধ্যমে, ‘‘বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে’’ বিষয়টি মধ্যে,‘‘ আমি দেখতে শুরু করলাম যে যারা যারা এই বিষয়টির উল্লেখ করেছেন তাদের প্রত্যেকেরই একটা দিকে মিল ছিল: ইব্রীয় পুস্তকের লেখক যার বিষয়েই বলছিলেন না কেন, প্রত্যেক ব্যক্তিই সরাসরি ঈশ্বরের বাক্য পড়েছেন এবং তাঁর আদেশের বাধ্য হয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, ঈশ্বর নোহকে একটি জাহাজ তৈরী করতে বলেছিলেন। এর আগে কোন বৃষ্টি না হওয়া সত্ত্বেও নোহ ঈশ্বরের কথার বাধ্য হল এবং জাহাজ তৈরী করল।

ঈশ্বর অব্রাহামকে এমন একটি দেশে যেতে বললেন যেখানে সে তার উত্তরাধিকার পাবে। অব্রাহাম ঈশ্বরের কথার বাধ্য হল এবং তার আশেপাশের সবকিছু ছেড়ে দিয়ে রওনা হল।

ঈশ্বর সারাকে যে কিনা বন্ধ্যা ছিল, তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি একজন ছেলে সন্তানের জন্ম দেবেন। শাস্ত্র বলে যে: ‘‘তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, যিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি বিশ্বাসযোগ্য।’’ তিনি ঈশ্বরের কথার বাধ্য হয়েছিলেন।

পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, যতই যুক্তিসঙ্গত তর্ক-বিতর্ক এবং কারণ থাকুক না কেন, আর একজন ব্যক্তি যাই অনুভব করুক না কেন, ইব্রীয় ১১ তে যাদের কথা সেখানে উল্লেখ করা আছে তারা তাঁর বাক্যের কথা শুনেছিল এবং সেই অনুযায়ী বাধ্য থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

আমি অবাক হতে লাগলাম যে, যদি লূক ৭ এবং ইব্রীয় ১১ অনেক বড় বিশ্বাসের বিষয়টি বর্ণনা করে, তাহলে এমন কি কোন অনুচ্ছেদ আছে যেটা বিশ্বাসের ঘাটতির বিষয়ে বর্ণনা করে?

আমি অবাক হতে লাগলাম যে, যদি লূক ৭ এবং ইব্রীয় ১১ অনেক বড় বিশ্বাসের বিষয়টি বর্ণনা করে, তাহলে এমন কি কোন অনুচ্ছেদ আছে যেটা বিশ্বাসের ঘাটতির বিষয়ে বর্ণনা করে?

তখন আমার মার্ক ৪ অধ্যায়ের একটি ঘটনা মনে পড়ল যেখানে যীশু গালীল সাগরের তীরে সারাদিনের প্রচারকাজ এবং শিক্ষাদান শেষ করলেন। তিনি তাঁর শিষ্যদেরকে সাগরের অন্য পাড়ে যেতে বললেন। তখনই, তারা যীশুর কথার বাধ্য হল, এবং তাঁকে নিয়ে নৌকায় করে অন্য পাড়ে যাবার জন্য রওনা দিলেন। কিন্তু যখন ঝড় আসল, তখন তারা খুব ভয় পেল এবং এই ভেবে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলল যে তারা কি আদৌ অন্য পাড়ে পৌঁছাতে পারবে। যখন যীশু তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন,‘‘ কেমন বিশ্বাস তোমাদের?’’ এখানে তিনি খুব সহজেই বলতে পারতেন যে,‘‘তোমরা কেন আমাকে এবং আমার কথার বাধ্য হচ্ছ না?’’

আমার কাছে মার্ক ৫ এর অধ্যায়ের প্রথম পদটি সবসময়ই খুব ভাল লাগে: ‘‘আর তারা সাগরের অন্য পাড়ে এসে পৌঁছাল’’ যীশুর কথা সত্য বলে প্রমাণিত হল।

এই তিনটি অনুচ্ছেদ নিয়ে গবেষণা করার মধ্য দিয়ে আমি বিশ্বাসের একটি সহজ এবং কার্যকরী সংজ্ঞায় উপনীত হয়েছি: বিশ্বাস মানে হল ঈশ্বরের বাক্যের বাধ্য হয়ে চলা। রোমীয় পুস্তকের সবগুলো অধ্যায়ে বিশ্বাসের বিষয়ে যা যা বলা হয়েছে সে সব বিষয়ে কি আমি আদৌ কোন প্রতিবেদন তৈরী করতে পারব নাকি জানি না, কিন্তু আমি এটা জানি যে ঈশ্বরের সাথে চলার জন্য আমি এমন কিছু শিখেছি যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে।

ঈশ্বর তাঁর বাক্য সম্বন্ধে কী বলেন?

এখনও, আমার আরও একটি প্রশ্ন আছে। বিশ্বাস যদি ঈশ্বরের কথার বাধ্য হয়ে চলাকে বুঝায়, তাহলে ঈশ্বর তাঁর নিজের বাক্য সম্বন্ধে কি বলেন? আমি শাস্ত্রেই এর উত্তর পেয়েছি:

‘‘আকাশ ও পৃথিবীর শেষ হবে, কিন্তু আমার কথা চিরদিন থাকবে।’’

‘‘কিন্তু প্রভুর বাক্য চিরকাল থাকে।’’১০

‘‘ঘাস শুকিয়ে যায় আর ফুলও ঝরে পড়ে, কিন্তু আমাদের ঈশ্বরের বাক্য চিরকাল থাকে ‘’১১

এই পদগুলো আমাকে বলছিল যে আমার জীবনের সবকিছুরই পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য চিরকাল থাকবে। তাঁর সত্যের কোন পরিবর্তন হয় না। ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস কীভাবে আমার পুরো জীবনটাকে প্রভাবিত করতে পারে তার এক ঝলক আমি সবেমাত্র দেখতে শুরু করেছি।

উদাহরণস্বরূপ, আমি বিষয়গুলোকে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি। সে সময় আমি এতটাই খুশি হই যে আমার মনে হয় আমি কখনই আর দু:খ পাব না। অন্যান্য সময়ে আমার মনে হয় যে আমি এতটাই দু:খী যে আমি আর কখনই খুশী হতে পারব না, আর এমনও সময় আছে যখন আমি কিছুই অনুভব করি না।

কিন্তু আমার অনুভূতিগুলো যত শক্তিশালী ভাবেই ওঠানামা করুক না কেন, ঈশ্বরের বাক্য হল

  • আমি যা-ই অনুভব করি না কেন তার চেয়েও সত্য
  • আমি যে অভিজ্ঞতাই লাভ করি না কেন তার চেয়েও সত্য
  • আমি যেকোন পরিস্থিতিতেই পড়ি না কেন তার চেয়েও সত্য
  • এই পৃথিবীর সব কিছুর চাইতেও সত্য

কেন? কারণ স্বর্গ এবং পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য কখনও শেষ হবে না। এর মানে হল আমি যা ই অনুভব করি বা যে অভিজ্ঞতাই লাভ করি না কেন, আমি ঈশ্বরের বাক্যকে আমার জীবনের অপরিবর্তনীয় বাস্তবতা হিসেবে বেছে নিয়ে সেটার উপর নির্ভর করতে পারি।

আমি গ্রীষ্মকালের সেই বিকেল এবং বাড়ির কাজের অ্যাসাইনমেন্টটিকে আমার জীবনে ঘুরে দাঁড়ানোর সময় হিসেবে দেখি। এর পরে অসংখ্যবার আমার মনে হয়েছে যে, পরিস্থিতি এবং অনুভূতি জীবনের থেকেও বাস্তব, কিন্তু আমি ঈশ্বরের বাক্যকে অন্য যেকোন কিছু থেকে সত্য এবং বাস্তব বলে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি বিশ্বাসে চলাকেই বেছে নিয়েছি।

মাঝে মাঝে এই সিদ্ধান্তকে বেশ কঠিন বলে মনে হয়েছে।

অনুভূতিগুলোর কি হবে?

গ্রীষ্মকালের সেই বিকেলের পর এমনও সময় গিয়েছে যখন আমি ঈশ্বরের ভালবাসা অনুভব করতাম না। তখন আমি অনুভূতির এই দোটানায় পড়ি যে, আমি কি আত্ম-করুণার বশে এই অনুভূতিটাকে প্রশ্রয় দেব, নাকি আমি বলব,‘‘প্রভু, আমার মনে হচ্ছে যে আমাকে ভালবাসা হয় নি।’’ এটাই সত্য। আমি এখন এই জায়গাতেই আছি। কিন্তু প্রভু, তোমার বাক্য বলে যে তুমি আমাকে ভালবেসেছ। এমনকি, তুমি বলেছ যে, তুমি আমাকে অশেষ ভালবাসা দিয়ে ভালবেসেছ। তুমি কখনই আমাকে ভালবাসায় বিরতি দাও না। আমার জন্য তোমার ভালবাসা সব অবস্থাতেই স্থির থাকে।১৩ তোমার বাক্য বলে যে তোমার মধ্যে কোন পক্ষপাতিত্ব নেই। এর মানে হল তুমি আমাকে যতটা ভালবাস তার থেকে কাউকেই তুমি এর চেয়ে বেশি ভালবাস না। তাই, প্রভু, আমাকে ভালবাসার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।১৪ আমার অনুভূতির থেকেও তোমার বাক্য অনেক বেশি সত্য।

আমি এটা উপলব্ধি করতে শুরু করলাম যে, আমার অনুভূতিগুলোর উপর এই ধরণের সাড়াদান আমাকে আমার অনুভূতিগুলো নিয়ে ঈশ্বরের সামনে সৎ থাকতে এবং আমার অনুভূতিগুলো যখন ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিগুলোকে অস্বীকার করতে চায় তখন আমাকে ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি বিশ্বাস করাকেই বেছে নিতে সাহায্য করছে।

অন্যান্য সময় আমার মধ্যে ভয় বা একাকীত্ব অথবা হতাশা কাজ করে। জীবনের পরিস্থিতিগুলো নিয়ে আমার হৃদয়ে আক্ষরিক অর্থেই যন্ত্রণা অনুভূত হয়, এবং সেই মুহুর্তগুলোতে আমি ঈশ্বরের বাক্যের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ করার মাধ্যমে প্রলোভনে পড়ি। কিন্তু এর পরিবর্তে আমি আমার ইচ্ছাশক্তি দ্বারা ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখাটাকেই বেছে নিই। হাজারো বার আমার প্রার্থনাগুলো এভাবে শুরু হয়েছে,‘‘প্রভু,আমার.... অনুভূতি হচ্ছে, কিন্তু প্রভু, তোমার বাক্য বলে যে...’’

আর আমি খুঁজে পেয়েছি যে, তিনি তাঁর মতন করে এবং তাঁর সময়মত তাঁর বাক্যের সাথে আমার অনুভূতিগুলোর সংযোগ স্থাপন করেন।

আমাদেরকে আবেগপ্রবণ মানুষ হিসেবে তৈরী করা হয়েছেैं

যখন আমি কেমন অনুভব করছি সেই বিষয়টি নিয়ে আমাকে প্রলোভনে ফেলা হয়, তখন এটা আমাকে এটা মনে করিয়ে দেয় যে, ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন এবং প্রতিমূর্তির অংশ হিসেবে আমরা আবেগপ্রবণ মানুষ। অনূভূতি খারাপ কিছু নয়। এমনকি খ্রীষ্টেরও অনুভূতি ছিল। তিনি ‘‘অনুভব না করার কোন চেষ্টা’’ করেন নি। তিনি তাঁর আবেগগুলোকে লুকিয়ে রাখেন নি; এর পরিবর্তে তিনি সেগুলোকে তাঁর সাথে পিতার সম্পর্কের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সৎ, বাস্তব, খাঁটি। তাঁর ক্রশারাপনের আগের রাতে গেৎশিমানী বাগানে ঘটনা সম্পর্কে, বাইবেল আমাদের বলে যে যীশু খুব ‘‘ক্লান্ত , ‘‘গভীরভাবে দু:খগ্রস্থ’’ ‘‘যন্ত্রণাগ্রস্থ’’ এবং ‘‘নিদারূণ যন্ত্রণায়’’ ছিলেন।১৫ সে সময়ে যীশুর অতটা খারাপ অনুভূত হওয়ার পরও তিনি কেমন বোধ করছিলেন এবং পিতাকে তিনি কতটা বিশ্বাস করতেন, সেটা তিনি প্রকাশ করেছেন।

আমরাও, আমাদের অনুভূতিগুলো নিয়ে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করার অপরিসীম স্বাধীনতা পেয়েছি, আমরা কি অবস্থায় আছি এবং আমাদের জীবনে কি চলছে তা তাঁকে সততার সাথে জানানোর স্বাধীনতা আমাদের আছে।

আমরা কীভাবে সাড়াদান করব?

বাইবেল প্রতিশ্রুতি দেয় যে, যারা ঈশ্বরকে সত্যিকারভাবে ভালবাসে, তাদের তিনি তাঁর পুত্রের মত হবার জন্য আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন,’’১৬ আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়ত এই ধরণের প্রার্থনা করেছেন: ‘‘প্রভু, আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করি যে, তুমি আমাকে আরও বেশি করে তোমার মত করে গঠন কর। আমি প্রার্থনা করি যে, তুমি আমাকে খ্রীষ্টের মত হবার জন্য গঠন করে তুলবে।’’ প্রায়শই আমরা চাই যেন, ঈশ্বর আমাদেরকে অনুভূতিনাশক কিছু দেন যাতে তিনি যখন আমাদেরকে খ্রীষ্টের মত নিখুঁত চরিত্রের অধিকারী হয়ে ওঠার জন্য আমাদের হৃদয়ের চিকিৎসা করবেন তখন যাতে আমরা টের না পাই। পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়াটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কিছুই টের পেতে চাই না! আমরা এর ফলাফল চাই কিন্তু এই যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে চাই না।

কিন্তু ঈশ্বর এভাবে কাজ করেন না। আমরা কেমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি সেটা আমাদের প্রভু জানেন, কিন্তু আমরা যার মধ্য দিয়ে যাই সেটার চাইতে আমরা কিভাবে সাড়াদান করছি সেটা নিয়ে তিনি বেশি চিন্তিত। এই সাড়াদান হল আমাদের ইচ্ছাশক্তির ব্যাপার। তিনি আমাদেরকে পরীক্ষা, প্রলোভন এবং জীবনের অনেক চাপযুক্ত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে দেন যাতে করে, হয় আমরা আমাদের অনুভূতিগুলো এবং জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোর উপর বিশ্বাস করাকে বেছে নিই নতুবা তাঁর বাক্যের বাধ্য হয়ে চলাকে বেছে নিই।

আমি তাঁর বাক্যানুসারে চলাকে অভ্যাস হিসেবে নিতে শিখে গিয়েছি—আর এখন এটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে! আপনি এবং আমি হয় আমাদের অনুভূতি, চিন্তাভাবনা ও পরিস্থিতে অভ্যস্ত হয়ে সেগুলোকে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করতে দিতে পারি, নতুবা আমাদের অনুভূতি এবং জীবনের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও ঈশ্বরের বাক্যকে গ্রহণ করার অভ্যাস করতে পারি। আমাদের যেকোন অনুভূতির থেকে তাঁর বাক্য অনেক বেশি সত্য এই বিষয়টিকে আমাদের বেছে নিতে হবে।

আমি আমার জীবনকে ঈশ্বরের বাক্যে আজীবন চলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করেছি, এবং ঈশ্বর এই প্রতিশ্রুতিকে সম্মানিত করেছেন। কিন্তু এরপরও, এমন অনেক সময় এসেছে যখন আমি বিশ্বাসই করতে পারি নি যে, আমি এখন যেই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি সেটার থেকে সত্য কিছু আছে কারণ তখন আমার অনুভূতিগুলো চিৎকার করছিল। ঈশ্বরের বাক্যের বিপরীত দিক আসে কিন্তু আমি প্রত্যেকবারই বুঝতে পেরেছি যে ঈশ্বর তাঁর বাক্যের প্রতি বিশ্বস্ত থাকেন।

(১) রোমীয় ১:১৭ (২) ১ম যোহন ৫:৪ (৩) লূক ৭:৭ (৪) লূক ৭:৯ (৫) ইব্রীয় ১১:৭ (৬) ইব্রীয় ১১:৮ (৭) ইব্রীয় ১১:১১ (৮) মার্ক ৪:৪০ (৯) মথি ২৪:৩৫ (১০) ১ম পিতর ১:২৫ (১১) যিশাইয় ৪০:৮ (১২) যিরমিয় ৩১:৩ (১৩) ১ম করিন্থীয় ১৩ (১৪) প্রেরিত ১০:৩৪ (১৫) মথি ২৬:৩৭-৩৮; মার্ক ১৪:৩৩; লূক ২২:৪৪ (১৬) রোমীয় ৮:২৮-২৯

এই প্রতিবেদনটি নে বেইলীর লেখা ফেইথ ইজ নট এ ফিলিং বইটির উদ্ধৃতাংশ। গ্রন্থস্বত্ত্ব ©২০০২। ওয়াটারবুক প্রেস থেকে প্রকাশিত। লেখকের অনুমতিসাপেক্ষে ব্যবহৃত।